ঈদ শব্দটির অর্থ হল খুশি। অর্থাৎ আনন্দ প্রকাশ করা। আর ঈদের দিন মানে হল খুশির দিন বা আনন্দের দিন। তাহলে বোঝা গেল ঈদের দিন এমন একটি দিন যে দিন আমরা মুসলিমরা সকলে খুশি উদযাপন করতে পারি।
এবার মীলাদুন নবী বলতে কি বুঝায় ? মীলাদুন নবী মানে হলও নবীজির জম্ম দিবস। তাহলে ঈদে মীলাদুন নবী বলতে বোঝায় নবীজির জম্ম বা এই দুনিয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে আগমন উপ্ললক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করা।

পরীক্ষায় পাশ করলে খুশি হন !
আপনি যদি বিয়ে করলে খুশি হন !
আপনি যদি সন্তান হলে খুশি হন !
আপনি যদি বিদেশ গেলে খুশি হন !
আপনি যদি কিছু উপহার পেলে খুশি হন !
তাহলে আপনার-আমার যিনি নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে আমরা কি খুশি হব না?

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনে সমস্ত কায়েনাত খুশি হয়েছেন কিন্তু কেবল মাত্র ইবলিস শয়তান দুঃখে, ক্ষোভে কেদেছেন। কারণ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম শত্রু ইবলিস শয়তান।

পর্ব-২ – ঈদ ই মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়ে কোরআন শরীফ থেকে দলীল নিয়ে আলোচনা – ২
এইখানে ক্লিক করুন https://goo.gl/arqLb4

ফযীলতঃ

মক্কা শরীফের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ,ইমামুল মুহাদ্দেসিন আল্লামা শিহাব উদ্দিন আহমদ ইবনে হাজার আল হায়তামী আশশাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আলাইহি (যার জন্ম ৮৯৯ হিজরী, ইনতিকাল ৯৭৪ হিজরী) তার লিখিত “আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের মধ্যে নিম্নোক্ত হাদীস গুলো তিনি বর্ণনা করেন-

১। সর্বশ্রেষ্ট সাহবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক আলাইহিস সালাম বলেন-
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”।
দলীল-
√ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭

২। দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম বলেন-
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করলো, সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো”।
দলীল-
√আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭

৩। তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান বিন আফফান আলাইহিস সালাম বলেন –
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো”।
দলীল-
√আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮

৪। চতুর্থ খলিফা হযরত আলি কাররামাল্লাহু ওয়জহাহু আলাইহিস সালাম বলেন-
যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাকে সম্মান করবে হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে”।
দলীল-
√আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮

১. প্রসিদ্ধ তাবেঈ হযরত হাসান বসরী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন

ﻗﺎﻝ ﺣﺴﻦ ﺍﻟﺒﺼﺮﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﯽ ﻋﻨﻪ ﻭﺩﺩﺕ ﻟﻮ ﮐﺎﻥ ﻟﯽ ﻣﺜﻞ ﺟﺒﻞ ﺍﺣﺪ ﺫﮬﺒﺎ ﻓﺎﻧﻔﻘﺘﻪ ﻋﻠﯽ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻣﻮﻟﺪ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﯿﻪ ﻭﺳﻠﻢ

অর্থাৎ- যদি আমার উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকত তাহলে আমি তা রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহফিলে খরচ করতাম। [আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-১১]
২. হযরত জুনাইদ বাগদাদী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনو যে ব্যক্তি ঈদ-ই-মিলাদুন্নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ উপস্থিত হয়ে তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করেছে, সে ঈমানের সফলতা লাভ করেছে। [আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-১১]

إِنَّ اللّٰهَ وَمَلائِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِىِّ يٰاَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيْمًا

অর্থ: “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক এবং উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ছলাত তথা দুরূদ শরীফ পাঠ করেন। হে মু’মিনগণ! তোমরাও হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ছলাত তথা দুরূদ শরীফ পাঠ করো এবং সালাম প্রেরণ করো প্রেরণ করার মত।” (সূরা আহযাব : আয়াত ৫৬)

আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদীছ শরীফ-এ ছালাত-সালাম পাঠ করার গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْلَى النَّاسِ بِىْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ اَكْثَرُهُمْ عَلىَّ صَلٰواةً.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “ঐ ব্যক্তিই ক্বিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে ব্যক্তি আমার প্রতি অধিক মাত্রায় ছলাত পাঠ করবে।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মায়ারিফুস সুনান, শরহুত ত্বীবী, আত তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব)

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-

عَنْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لِلّهِ مَلٰئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فِى الاَرْضِ يُبَلِّغُوْنِىْ مِنْ اُمَّتِىَ السَّلامَ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন-এর কিছু সংখ্যক ফেরেশতা রয়েছেন, যারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করে বেড়ান এবং আমার উম্মতের পাঠকৃত সালাম আমার নিকট পৌঁছে দেন।” (নাসায়ী শরীফ, সুনানুদ দারিমী, মিশকাত শরীফ, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, আত তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব।)

ঈদ কয়টিঃ

মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-

قال عسى بن مريم اللهم ربنا انزل علينا مائدة من السماء تكون لنا عيدا لاولنا واخرنا.

অর্থঃ- হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে আল্লাহ পাক আপনি আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যসহ খাঞ্চা নাজিল করুন। যাতে সে দিনটি আমাদের জন্য এবং আমাদের পরবর্তীদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারিত হয়। (সূরা মায়িদা-১১৪)

যেমন কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম দোয়া করেছিলেন-

اللهم ربنا انزل علينا مائدة من السماء تكون لنا عيدا لاولنا واخرنا واية منك وارزقنا وانت خير الرازقين. قال الله انى منزلها عليكم فمن يكفر بعد منكم فانى اعذبه عذابا لا اعذبه احدا من العالمين .

অর্র্থ: “আয় আমাদের রব আল্লাহ পাক! আমাদের জন্য আপনি আসমান হতে (বেহেশতী খাদ্যের) খাদ্যসহ একটি খাঞ্চা নাযিল করুন। খাঞ্চা নাযিলের উপলক্ষটি, অর্র্থাৎ খাদ্যসহ খাঞ্চাটি যেদিন নাযিল হবে সেদিনটি আমাদের জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ (খুশি) স্বরূপ হবে এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন হবে। আমাদেরকে রিযিক দান করুন। নিশ্চয় আপনিই উত্তম রিযিকদাতা। আল্লাহ পাক বলেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের প্রতি খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিল করবো। অতঃপর যে ব্যক্তি সে খাদ্যসহ খাঞ্চাকে এবং তা নাযিলের দিনটিকে ঈদ বা খুশির দিন হিসেবে পালন করবে না বরং অস্বীকার করবে আমি তাকে এমন শাস্তি দিব, যে শাস্তি সারা ক্বায়িনাতের অপর কাউকে দিব না।” (সূরা মায়িদা-১১৪,১১৫)

عن ابى للة بن عبد المنذر قال قال النبى صلى الله عليه وسلم ان يوم الجمعة سيد الايام واعظمها عند الله وهو اعظم عند الله من يوم الاضحى ويوم الفطر فيه خمس خلال خلق الله فيه ادم واهبط الله فيه ادم الى الاوض وفيه توفى الله ادم وفيه ساعة لايسأل العبد فيها شيأ الا اعطاه ما لايسأل حراما وفيه تقوم الساعة ما من ملك مقرب ولا سماء ولا ارض ولا رياح ولا جبال ولا بحر الا هو مشفق من يوم الجمعة .

অর্র্থ: “হযরত আবূ লুবাবা ইবনে আব্দুল মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জুমুআর দিন সকল দিনের সর্দার এবং সকল দিন অপেক্ষা আল্লাহ পাক-উনার নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এটি ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুল ফিতরের দিন অপেক্ষাও আল্লাহ পাক-উনার নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এ দিনটিতে পাঁচটি (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় রয়েছে, (১) এ দিনে আল্লাহ পাক হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন, (২) এ দিনে উনাকে যমীনে প্রেরণ করেছেন, (৩) এ দিনে উনাকে বিছাল শরীফ দান করেছেন, (৪) এ দিনটিতে এমন একটি সময় রয়েছে, যে সময়টিতে বান্দা আল্লাহ পাক-উনার নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন, যে পর্যন্ত না সে হারাম কিছু চায় এবং (৫) এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। এমন কোন ফেরেশতা নেই, আসমান নেই, যমীন নেই, বাতাস নেই, পাহাড় নেই, সমুদ্র নেই, যে জুমুআর দিন সম্পর্কে ভীত নয়।” (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও উৎসাহ উদ্দিপনার সাথে মীলাদুন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করেন

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ শরীফ-এর মাহফিল করে থাকি তা খোদ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানা এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের যামানাতেই ছিল।

যেমন এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه كان يحدث ذات يوم فى بيته وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لقوم فيستبشرون ويحمدون الله ويصلون عليه صلى الله عليه وسلم فاذا جاء النبى صلى الله عليه وسلم قال حلت لكم شفاعتى.

অর্থ:- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা উনার নিজগৃহে সমবেত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা তথা তাছবীহ্-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর (ছলাত ও সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপস্থিত হলেন এবং (মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে) বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান্ নাযীর, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-

عن ابى الدرداء رضى الله تعالى عنه انه مر مع النبى صلى الله عليه وسلم الى بيت عامر الانصارى رضى الله تعالى عنه وكان يعلم وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لابنائه وعشيرته ويقول هذا اليوم هذا اليوم فقال عليه الصلوة والسلام ان الله فتح لك ابواب الرحمة والملائكة كلهم يستغفرون لك من فعل فعلك نجى نجتك.

অর্থ: “হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি উনার সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলেছেন, এই সেই দিবস এই সেই দিবস (অর্থাৎ এই দিবসে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ এসেছেন। এই দিবসে ইহা সংঘটিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি) এতদ্বশ্রবণে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার সমস্ত রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উš§ুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফেরেশতাগণ তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ তোমার মত এরূপ কাজ করবে, তোমাদের মত সেও নাযাত (ফযীলত) লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান্ নাযীর, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

উপরোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয় থেকে প্রথমতঃ যে বিষয় প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ‘মীলাদ শরীফ-এর’ মজলিস করেছেন। আর আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা শুধু সমর্থনই করেননি বরং তিনি মীলাদ শরীফ-এর মজলিস করার জন্যে উম্মতদেরকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন। সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, মীলাদ শরীফ-এর মজলিস করা সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সুন্নতে ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম।